অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হাকালুকি হাওর

    0
    241

    এম এম সামছুল ইসলাম জুড়ী (মৌলভীবাজার): অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত দেশের ঐতিহ্যবাহী হাকালুকি হাওর। প্রতি বছরের মতো এবারো বিচিত্র রং ও বর্ণের পাখি আসছে এখানে। গরম আবহাওয়ায় খাদ্যের নিশ্চিয়তা পেতে পুরো শীত মৌসুমে এরা উড়ে বেড়াবে হাকালুকি হাওর এলাকায়। আর বসন্তের শুরুতেই তাদের অস্থায়ী ঠিকানা গুটিয়ে নিজ নিজ দেশের উদ্দেশ্যে উড়াল দেবে এরা। শীত মৌসুম এলেই অতিথি পাখির আগমনের অপেক্ষায় থাকেন পাখি প্রেমিরা। পাখিদের এমন মুখরিত দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য দেখতে অনেককেই দেখা যায় হাওরের আশপাশে। ওরা হাওরপাড়ের হিজন, করচ, বরুন, আড়াং গাছেই গড়ে তোলে তাদের অস্থায়ী নিবাস।

    দুপুর বা বিকেলে হাকালুকির কয়েকটি বিলে পাখিদের খাবার নিয়ে ঝগড়া কিংবা খাদ্য সংগ্রহের দৃশ্য এখন নিত্য ব্যাপার। হাওর পাড়ের স্থানীয় অধিবাসীরা জানালেন, ইতোমধ্যে বড় বড় দলে হাওরের পিংলা , চাতলা, পরতি, চৌকিয়া, হাওর খাল, মালাম, গৌড়কুড়ি, নাগুয়া, তুরল, ফুটবিলে বিভিন্ন জাত ও রঙের অতিথি পাখির দেখা পাওয়া যায়। ক’দিন পর পাখিদের কিঁচিরমিচির আওয়াজে হাওরপাড়ের চার পাশ মুখরিত হয়ে উঠবে। ভূকশিমইল, সুজানগর ও জায়ফরনগর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা জানালেন, তাদের প্রতিবেশী অনেকেই এসব বিলে বিভিন্ন কৌশলে ফাঁদ পেতে জাল ও বিষটোপ দিয়ে প্রতিদিন ভোর, বিকেল ও রাতে পাখি ধরছে শিকারিরা। আর এসব পাখি বিক্রি করা হচ্ছে স্থানীয় ভোজনরসিকদের কাছে।

    এ ছাড়া হাওরের পাশের বাজার কিংবা মৌলভীবাজার, সিলেট বিভাগীয় শহরেও বিক্রি হচ্ছে এসব অতিথি পাখি। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, বিভিন্ন সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করে শিকারিরা তাদের সহযোগিদের নিয়ে পাখি শিকার করে বিক্রি করে। বাংলাদেশ হাওর বাঁচাও কৃষক বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ সভাপতি সিরাজ উদ্দিন আহমদ বাদশা জানান, শীতে পাখিগুলো মাত্র আসতে শুরু করেছে।

    এ সুযোগে একশ্রেণির অসাধু পাখি শিকারি ওদের নিধনে ফাঁদ পাততে শুরু করেছে। এদের কবল থেকে অতিথি পাখি রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের শিগগির কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অসীম চন্দ্র বণিক বলেন, আমি নিজে হাকালুকি হাওরে গিয়ে পাখির আনাগুনা দেখতে পেয়েছি। স্বচক্ষে না দেখলে এ অপরুপ সৌন্দর্য দেখা যাবে না। পাখি শিকারিদের ধরতে শীগ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।